Header Ads

যদি সময় থাকে তাহলে গল্পটা পড়ে দেখবেন।

যদি সময় থাকে তাহলে গল্পটা পড়ে দেখবেন।

এক স্কুলে কয়েক শত ছাত্র- ছাত্রী পড়ত, এরই মাঝে একটা ছাত্র ছিল, একটু ভিন্ন।যখন টিফিনের সময় হত সবাই টিফিন করতে যেত, কিন্তু ঐ ছেলেটা কখনোই টিফিন করতে যেত না। একা একা মাঠের কোনে এক গাছের নিচে বসে থাকতো।
তাকে কেউ দেখতে পারতো না, কারণ তার চুল গুলো ছিল এলোমেলো, জামা কাপড় ছিল নোংরা, গায়ে থাকতো দুর্বগন্ধ।
এমনতো অবস্থায় পরিক্ষা চলে আসলো, তাকে শিক্ষক পরিক্ষার ফি দিতে বলল, কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও দিতে সক্ষম হয় না। এভাবে দুই থেকে তিন চলে গেল। এর পর তাঁর বিরুদ্ধে সহকারী শিক্ষক অভিযোগ করলো প্রধান শিক্ষকের নিকট। তাকে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ডাকা হল, এবং শিক্ষক তাকে অনেক বকা জকা দিল। আরও বলল তোমাকে সেই যে ভর্তি করে গেল তোমার মা বাবা আর কোন দিন দেখি নাই।কেন তারা আসে না ? ছেলেটা তার পুরোনো ছিড়া ব্যাগটা নিয়ে চলে গেল।আর কোন দিন স্কুলে আসলো না। তার বয়স ছিল মাত্র চৌদ্দ থেকে পনেরো বছর।
কিছু দিন পর,
শিক্ষক বাসা থেকে বেরিয়ে স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন।রিকশার জন্য দারিয়েছিলেন। এমনতো অবস্থায় এক ছেলে রিকশা নিয়ে এসে হাজির হয়, ছেলেটা বলল স্যার আপনি স্কুলে যাইবেন ?
স্যার: হ্যাঁ।
ছেলে : তাহলে উঠে বসেন।( উঠে বসলেন )
ছেলে : স্যার আমারে চিনছেন ?
স্যার : না। ( না চেনার ভান করলেন। ভাবলেন মাত্র চৌদ্দ থেকে পনেরো বছরের ছেলে রিকশা চালায় কেন ? প্রশ্ন করলেন নিজের মনকে )
ছেলে : আমি আপনের স্কুলে পড়তাম।আপনে আমারে পরিক্ষার ফি দিয়া পারছিলাম না বইলা স্কুল থেইকা বাইর কইরা দিছিলেন।আমি তহন ম্যালা কষ্ট পাইছিলাম। কিন্তু এহন ভাবি আপনে ঠিক কাজটাই করছিলেন, আমি এহন দিনে তিন বার ভাত খাইতে পারি, মাছ, ডাল, আর আলু ভর্তা দিয়া।আর যহন ওরা টিফিন টাইমে খাইতে যেত আমারও খাইতে মুন চাইতো, পারি নাই, কারণ আমার তো কেউ ন্যায়।আমি নিজেও জানিনা, ক্যারা আমার মা বাবা। আর আগে সারাদিন পরতাম আর রাইত অইলে রাস্তার পাশে ঘুমাইতাম। তার পরেও ভাল নাগতো। আমি আসলেই এতিম , দুনিয়ার আমার কেউ ন্যায়। আমি আগে না স্যার, আপনার স্কুলের, বা আরোও অন্যান্য স্কুলের গেটে খারিয়া থাকতাম।একদিন হঠাৎ কইরা, এক ভদ্রলোক আর তার বউ আমারে আপনের স্কুলে ভর্তি কইরা দিছিলো। তাগোরে আমি চিনিনা। এই যে দেহেন আমি খালি বক বক করতেই আছি। স্যার স্কুলে আইয়া পরছেন।
স্যার: এই নাও তোমার ভারা।
ছেলে : এইডা কি কন স্যার ? আমি আপনের ছাত্র। আপনে আমারে কত জ্ঞান দিছেন, যা নিয়া এখনো বাইছা আছি।(ছেলেটা ভারা না নিয়ে চলে গেল )
শিক্ষক রিকশায় থাকা অবস্থায়ই রুমাল দিয়ে চোখের পানি মুছতে ছিলেন। ছেলেটা ভারা না নেওয়াতে সে আরও বেশি কান্না করতে লাগলেন। আর ভাবলেন আমি কি ঠিক করেছিলাম, নাকি বেঠিক করেছিলাম। সে কাঁদতে কাঁদতে চলে গেলেন।

[ বিঃ দ্রাঃ ] আসুননা আমারা একটু দাঁড়াই ওদের পাশে। বাংলার বুকে এখনো অনেক মানুষই তো আছে , যাদের আয় প্রতি মাসে এক লাখেরও বেশি।এখান থেকে কিছু টাকা ওদের তহবিলে দিননা, যেন ওরাও একটু দাঁড়াতে পারে।

যারা এই গল্পটা পড়েছেন, তাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ

No comments

Powered by Blogger.